বুয়েট প্রশাসনকে ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম ছাত্রলীগের
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ২১ ব্যাচের পুরকৌশল বিভাগের শিক্ষার্থী ইমতিয়াজ হোসেন রাহিম রাব্বির আবাসিক হলের বরাদ্দকৃত সিট বাতিল ঘোষণাকে অসাংবিধানিক ও নিয়ম বহির্ভূত দাবি করে এর প্রতিবাদ জানিয়েছে ছাত্রলীগ। একইসঙ্গে এই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করে তার সিট ফেরত দিতে বিশ্ববিদ্যালয়কে ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দেয় সংগঠনটি।
রোববার (৩১ মার্চ) দুপুরে রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে মৌলবাদী গোষ্ঠীর কালোছায়া থেকে মুক্ত করে বুয়েটে নিয়মতান্ত্রিক ছাত্র রাজনীতির দাবিতে এবং বুয়েট কর্তৃক গৃহীত অসাংবিধানিক, মৌলিক অধিকার পরিপন্থি, শিক্ষাবিরোধী সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আয়োজিত এক প্রতিবাদ সমাবেশ থেকে এ আল্টিমেটাম দেওয়া হয়।
সমাবেশে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ছাত্রলীগের সভাপতি রাজিবুল ইসলাম বাপ্পি বলেন, আমরা দেখেছি আমাদের এক ভাই ৭ মার্চের ভাষণে অনুপ্রাণিত হয়ে স্বাধীনতা দিবসের প্রোগ্রামে অংশ নিয়েছেন। যার কারণে তার হলের সিট কেঁড়ে নেওয়া হয়। আমরা বুয়েট প্রশাসনকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আমাদের ভাই রাব্বির সিট ফেরত দেওয়ার দাবি জানাই। অন্যথায়, যারা স্বাধীনতার বিপক্ষে কথা বলে তাদের বিরুদ্ধে কথা বলা হবে, তাদেরকে কোনো ছাড় দেওয়া হবে না।
তিনি বলেন, সিলেটের টাঙ্গুয়ার হাওরে শিবির ও জঙ্গি সদস্যরা মিটিং করলেও তাদেরকে জামিনে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। তারা পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করছেন, তাদেরকে বাধা দেওয়া হচ্ছে না। সেখানে শিবিরসহ অন্যান্য নিষিদ্ধ সংগঠনের কমিটি থাকলেও মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের কোনো প্রোগ্রামে অংশ নিলেই তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। আমাদের দাবি, বুয়েট ক্যাম্পাসে নিয়মতান্ত্রিক ছাত্র রাজনীতি চালু করতে হবে।
ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের সভাপতি সাদ্দাম হোসেনের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালি আসিফ ইনানের সঞ্চালনায় প্রতিবাদ সমাবেশে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি মাজহারুল কবির শয়ন ও সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকত, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সজল কুন্ডুসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা বক্তব্য দেন।
প্রসঙ্গত, গত ২৭ মার্চ রাতে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি ও দপ্তর সম্পাদকসহ অনেকেই বিশাল বহর নিয়ে বুয়েট ক্যাম্পাসে প্রবেশ করেন। তাদের ক্যাম্পাসে প্রবেশ করাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন বুয়েট শিক্ষার্থী ইমতিয়াজ রাব্বি।
ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ হওয়ার পরও বুয়েটে এ ধরনের কর্মকাণ্ডকে নতুন করে রাজনীতি শুরুর পাঁয়তারা হিসেবে দেখছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। যার প্রেক্ষিতে, ক্যাম্পাসে পুনরায় রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড শুরু হওয়া ও নিরাপত্তাহীনতার আশঙ্কায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে প্রশ্নবিদ্ধ করে আন্দোলন শুরু করেন তারা।এ সময় আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা ইমতিয়াজ রাব্বিকে স্থায়ী বহিষ্কারের দাবিতে আল্টিমেটাম দেন।
এ প্রেক্ষিতে গত শুক্রবার রাতে বুয়েট উপাচার্যের নির্দেশক্রমে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. মো. ফোরকান উদ্দিন স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে ছাত্রলীগকে সহযোগিতায় অভিযুক্ত শিক্ষার্থী ইমতিয়াজ হোসেন রাহিম রাব্বির হলের সিট বাতিল, তদন্ত কমিটি গঠন ও তদন্ত অনুযায়ী সিদ্ধান্ত গ্রহণ এবং পরীক্ষাসহ সব একাডেমিক কার্যক্রম চলমান থাকার কথা জানানো হয়।