ঢাকা শনিবার, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪

প্রতিদিনের ক্যাম্পাস
  • মতামত
  • বিশ্ব আত্নহত্যা প্রতিরোধ দিবসে ঢাকা কলেজের র‌্যালি ও কর্মসূচি পালন

বিশ্ব আত্নহত্যা প্রতিরোধ দিবসে ঢাকা কলেজের র‌্যালি ও কর্মসূচি পালন

'মুজিববর্ষে বাংলাদেশ-নেপাল সম্পর্ক আরো দৃঢ় হবে'

ঢাকা কলেজ প্রতিনিধিঃ প্রতিবছর ১০ সেপ্টেম্বর বিশ্বব্যাপী পালন করা হয় ‘বিশ্ব আত্মহত্যা প্রতিরোধ দিবস’। এ বছরের প্রতিপাদ্য বিষয় হচ্ছে ‘কাজের মাধ্যমে আশার সঞ্চার করা’।আর এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে এ বিষয়ে সচেতনতা তৈরীর লক্ষ্যে  ঢাকা কলেজ মনোবিজ্ঞান বিভাগ র‌্যালী ও সেমিনারের আয়োজন করে।

রোববার (১০ সেপ্টেম্বর)সকাল ১০:৩০ মিনিটে র‌্যালীর আয়োজন করে পরবর্তী বেলা  ১১:৩০ মিনিটে মনোবিজ্ঞান বিভাগের একটি রুমে সেমিনারের আয়োজন করা হয়।

এতে উপস্থিত ছিলেন মনোবিজ্ঞান বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ড.আবু সাইদ মোহাম্মদ আজিজুল ইসলাম।এছাড়াও,উপস্থিত ছিলেন মনোবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক আক্তারা বানু ,সহযোগী অধ্যাপক আব্দুল হাই সিদ্দিকীসহ অন্যান্য শিক্ষক-গন।
 
সেমিনারে অধ্যাপক  ড.আবু সাইদ মোহাম্মদ আজিজুল ইসলাম বলেন, আত্মহত্যার বিষয়গুলো আজকে নতুন না।এই যে বিশ খেয়ে,গলায় ফাঁস দিয়ে,ঘুমের ঔষধ খেয়ে বিভিন্নভাবে আত্নহত্যা করছে। আত্মহত্যার মুল কারন তিনটি।একটি হলো প্রেমে ব্যার্থতা,পরীক্ষায় ফেল করা,আরেকটি হলো একবিংশ শতাব্দীর চ্যালেন্স মোকাবিলা করতে যেয়ে যখন চতুর্থ  শিল্প বিপ্লব ঘটছে তখন তাদের মধ্য একটি নতুন উপসর্গ দেখা যাচ্ছে তা হলো অভিমান করে আত্মহত্যা।প্রযুক্তি আমরা এমনভাবে জড়িয়েছি যে আমাদের আবেগ চলে গেছে।বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি আমাদের দিয়েছেন বিছানা কিন্তু কেড়ে নিয়েছে আবেগ।এ আবেগের কোনো বহিঃপ্রকাশ নেই,বহিঃপ্রকাশ না থাকার কারনে সহ্য ক্ষমতাও কম।অল্পতেই অপরাধ করে ও মারা যায়।এই যে তার মানসিক অবস্থা,এটাকে যদি আমরা প্রতিরোধ করতে না পারি তাহলে আত্মহত্যা বাড়বেই।আত্মহত্যাকে বন্ধ করা যাবে না এটা থাকবে কিন্তু এই সংখ্যাটা একেবারে নিম্ন পর্যায়ে আনা।এজন্য, আত্মহত্যা প্রতিরোধ করতে চাচ্ছি।

বেসরকারি সংস্থার গবেষণার তথ্য থেকে জানা যায়, দেশে চলতি বছরের প্রথম আট মাসে ৩৬১ শিক্ষার্থী আত্মহনন করেছেন। এদের মধ্যে নারী শিক্ষার্থী ২১৪ জন, যাদের ২৬ শতাংশই অভিমান থেকে আত্মহননের পথ বেছে নিয়েছেন। গবেষণায় দেখা গেছে এদের ৬৭ শতাংশ শিক্ষার্থীর বয়স ১৯ বছরের নিচে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সরকারি-বেসরকারিভাবে সমন্বিত কার্যক্রম না থাকায় আত্মহনন প্রতিরোধ করা যাচ্ছে না। এ ক্ষেত্রে মানসিক স্বাস্থ্য সেবায় জোর দিয়েছেন তারা।

বেসরকারি সংস্থা আঁচল ফাউন্ডেশনের তথ্যমতে, ২০২১ সালে দেশে ১০১ জন শিক্ষার্থী আত্মহত্যা করেন। সেখানে গত বছর তা পাঁচগুণ বেড়ে দাঁড়ায় ৫৩২ জনে। আর চলতি বছর আত্মহত্যা করেছেন ৩৬১ জন।

আঁচল ফাউন্ডেশনের তথ্যানুসারে, চলতি বছর আত্মহত্যাকারীদের মধ্যে স্কুলগামী শিক্ষার্থী সবচেয়ে বেশি। ১৬৯ জন (প্রায় ৪৭ শতাংশ)। এ ছাড়া কলেজগামী ২৬ শতাংশ, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ১৮ শতাংশ এবং মাদ্রাসাশিক্ষার্থী রয়েছে ৮ শতাংশ।

বিভাগ অনুযায়ী, এ বছর সবচেয়ে বেশিআত্মহত্যার ঘটনা ঘটেছে ঢাকা বিভাগে ৩১ শতাংশ। সবচেয়ে কম সিলেটে ২ দশমিক ৫ শতাংশ।

বেসরকারি সংস্থাগুলোর তথ্যমতে, দেশের ২১ দশমিক ৫ শতাংশ মানুষ কোনো না কোনো ধরনের মানসিক সমস্যায় ভুগছেন। তবে স্বাস্থ্যসেবার আওতায় আসছেন ১০ শতাংশেরও কম।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পরিবারে বাবা-মায়ের সম্পর্কে অস্থিরতা, টানাপোড়ন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে মানসিক স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ না থাকা, চলমান সামাজিক অস্থিরতা, কোভিডের দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব ও স্থানীয় পর্যায়ে মানসিক স্বাস্থ্যের চিকিৎসায় পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধা না থাকায় শিশু থেকে শুরু করে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীর আত্মহত্যার ঘটনা বাড়ছে।


সর্বশেষ