ঢাকা শনিবার, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪

প্রতিদিনের ক্যাম্পাস
  • মতামত
  • ঢাকা কলেজ অধ্যাপক সাইফুল ইসলামের দৃষ্টিতে স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস
অধ্যাপক সাইফুল ইসলাম চৌধুরী

ঢাকা কলেজ অধ্যাপক সাইফুল ইসলামের দৃষ্টিতে স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস

'মুজিববর্ষে বাংলাদেশ-নেপাল সম্পর্ক আরো দৃঢ় হবে'

 

ঢাকা কলেজ প্রতিনিধি : ঘটনাবহুল ১০ জানুয়ারি বাঙালি জাতির মুকুটহীন সম্রাট বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস আজ। ১৯৭২ সালের এইদিনে বাঙালির মুক্তিসংগ্রামের নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান পাকিস্তানের কারাগার থেকে মুক্তি পেয়ে সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশের ভূমিতে পদার্পন করে। এজন্য এ দিনটিকে বঙ্গবন্ধু ' অন্ধকার থেকে আলোর পথে যাত্রা' বলে আখ্যায়িত করেছিলেন।

 ঐতিহাসিক বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবসের প্রেক্ষাপট,গুরুত্ব, তাৎপর্য ইতিহাসের এ ঘটনা থেকে ছাত্রসমাজ শিক্ষা গ্রহণ করে। এসকল বিষয়সমূহ নিয়ে ঢাকা কলেজ রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক সাইফুল ইসলাম চৌধুরী তার বক্তব্য তুলে ধরেন।

অধ্যাপক সাইফুল ইসলাম চৌধুরী বলেন বাঙালি জাতির মূল ব্যক্তিত্ব বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। ইতিহাসে মাহানায়ক হিসেবে তাকে অভিহিত করা হয়। তার রাজনৈতিক জীবন পর্যালোচনা করলে আমরা দেখতে পাই তিনি কখনও অন্যায়ের সাথে আপোষ করেনি। শুরুর দিকে বঙ্গবন্ধু রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব পেয়েছিলেন যুক্তফ্রন্ট গঠনের মধ্যে দিয়ে যদিও পাকিস্তানি শাসকগোষ্টি সেটিকে বেশিদিন টিকিয়ে রাখতে দেয়নি। এর পরবর্তিতে বঙ্গবন্ধু আন্দোলন সংগ্রামের মাধ্যমে এদেশের জনগণকে সচেতন করা প্রচেষ্টা করছিলেন। এর ফলস্বরূপ বঙ্গবন্ধুকে আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা দায়ের করে এবং কারাগারে প্রেরণ করে। বাঙালি জাতির মূল চালিকাশক্তি জেলখানায় আবদ্ধ হয়। এরই ধারাবাহিকতায় বাঙালিদের মনে চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয় এবং একটি রেনেসা বা ৬৯ এর গনভুত্থান ঘটে। এর বিভিন্ন ঘটনার প্রেক্ষিতে বঙ্গবন্ধু বুঝতে পারে স্বাধীনতা ছাড়া এদেশের মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব নয়। এরপর তিনি ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণের মাধ্যমে বাঙালিদের মুক্তির জাগরণ সৃষ্টি করেন। এই ভাষণে বঙ্গবন্ধু মানুষের মধ্যে রাজনৈতিক অনুরনণ ও মানুষের চেতনা শক্তিতে আলোক প্রজ্জলন করেছিলেন। অতপর আমরা দেখি ২৫ মার্চ কালোরাতে পাকিস্তান সেনাবাহিনী বঙ্গবন্ধুকে গ্রেফতার করে। মূলত স্বধীনতার ঘোষণার জন্যই বঙ্গবন্ধুকে গ্রেফতার করে পশ্চিম পাকিস্তানে নেওয়া হয়। পাকিস্তানি শাসকগোষ্টি বঙ্গবন্ধুকে দেশদ্রোহি হিসেবে চিহ্নিত করে মৃত্যুদন্ড কর্যকর করার পরিকল্পনা তারা গ্রহণ করেছিল। এ অবস্থায় বঙ্গবন্ধুর জন্য আন্তর্জাতিক বলয় সৃষ্টি হয়। সে বলয়ে একজন মহান মানুষ মানুষের অধিকারের জন্য সারাজীবন জেল খেটেছেন। এধরণের মানুষকে যদি মৃত্যুদন্ড দেওয়া হয় তবে পৃথিবী অন্ধকারে নিমজ্জিত হবে।তাই এধরণের মানুষকে বাচিয়ে রাখার জন্য যে চাপ তৈরি করা দরকার পাকিস্তানি শাসকগোষ্টির ওপর সে চাপ তৈরি হয়েছিল। অতপর আন্তর্জাতিক ব্যক্তিত্ব হিসেবে বঙ্গবন্ধুর মুক্তির পরে তিনি লন্ডনে যান এরপর ভারতে আসেন এবং ভারতে থেকে বাংলাদেশে তার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন হয় ১০ জানুয়ারি। সেখানে স্ব ইচ্ছায় লক্ষ লক্ষ মানুষ উপস্থিত হয়ে এক মুকুটহীন সম্রাটে ভূষিত করে বঙ্গবন্ধুকে। তাকে সম্মান জানানো হয়, তার গ্রহণযোগ্যতা অনেক বৃদ্ধি পায়।

তিনি আরও বলেন ইতিহাসের এ ঘটনার মাধ্যমে ছাত্রসমাজ সৎভাবে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ লালন করার শিক্ষা লাভ করবে। তবেই বাংলাদেশের ছাত্রসমাজ সামনের ভবিষ্যত আলোকময় পথ দেখতে পাবে এবং বিভিন্ন কার্যক্রমের মাধ্যমে নিজেকে নিয়োজিত রেখে ছাত্রসমাজ যদি নিজের জীবনকে গড়ে তোলে, উন্নয়ূলক কার্যক্রমে সঠিকভাবে অংশগ্রহণ করে, সবধরণের সহিংসতা থেকে নিজেকে দূরে রাখে ও সন্ত্রাসী কার্যক্রম না করে তবে বঙ্গবন্ধুর ইচ্ছা বাস্তবায়ন করতে পারবে এবং নিজের জীবনকে পরিশীলিত করতে পারবে।


প্রতিদিনর ক্যাম্পাস /ও হা 


সর্বশেষ